উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মার্চপাস্টে লাল-সবুজের পতাকা প্রদর্শন, স্টেডিয়ামের লাউড বক্সে ‘বাংলাদেশ’ নাম ঘোষণা এবং পরে হিটে গিয়ে বিদায়! অ্যাথলেটিকসের ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে এত দিন এটাই ছিল চেনা দৃশ্য; সেখানে কিনা গতকাল কাজাখস্তানের আস্তানায় এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপের পুরস্কার মঞ্চে সবার ওপরে বাংলাদেশের পতাকা, সেই সঙ্গে ‘আমার সোনার বাংলা’ সুর। গর্বিত ইমরানুর। বাবা-মাকে কথা দিয়েছিলেন দেশের হয়ে একদিন কিছু করবেন। কথা রেখেছেন লন্ডনপ্রবাসী ইমরানুর। ৬০ মিটার স্প্রিন্টে ৬.৫৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে স্বর্ণ জিতেছেন। এশিয়ার কোনো মঞ্চে বাংলাদেশের স্প্রিন্টারের এমন কীর্তি আগে দেখেনি কেউ। ‘একটা স্বপ্ন নিয়ে ২০২১ সালে দেশে গিয়েছিলাম। মা-বাবা খুব করে চাইতেন দেশের হয়ে যেন কিছু করতে পারি। সেই স্বপ্ন বোধহয় পূরণ হয়েছে। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের হয়ে পদক জিতেছি। বাবা-মা অনেক খুশি হয়েছেন।’ হোয়াটসঅ্যাপের অডিও কলে ভাঙা ভাঙা বাংলায় মেশানো ছিল ইমরানুরের গভীর আবেগ।

কথা ছিল কাজাখস্তান থেকে ফিরে যাবেন লন্ডনে কিন্তু দেশের হয়ে স্বর্ণ জয়ের পর তাঁকে ঢাকায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন। ‘তাঁর ফ্লাইট শিডিউল পরিবর্তন করা হয়েছে। আগামীকাল ইমরানুর ঢাকা ফিরবেন।’ তাঁর সঙ্গে থাকা অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রকিব মিন্টু জানান, তিনি আজ দেশে ফিরে বিস্তারিত মিডিয়ার সামনে জানাবেন। দেশে ইমরানুরের জন্য একটা বড় ধরনের সংবর্ধনা আয়োজনের ইচ্ছা আছে তাঁদের। ক্রিকেট, ফুটবল, আরচারি আর শুটিংয়ের বাইরে অ্যাথলেটিকস থেকেও যে সাফল্য আসতে পারে, তা এবার প্রমাণ করে দিলেন দেশের দ্রুততম মানব ইমরানুর।

ছেলেবেলায় ফুটবলেই সব মনোযোগ ছিল তাঁর। কিন্তু একটা সময় বুঝতে পারেন এশিয়ানদের জন্য ইংল্যান্ডে পেশাদার ফুটবলে নাম লেখানোটা কঠিন। তাই স্কুলে থাকতেই ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে নাম লেখান। ২০১৪ ও ২০১৬ সালে ব্রিটিশ ইউনিভার্সিটি ইনডোর অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় পছন্দের ৬০ মিটার স্প্রিন্টে সেরা হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মা-বাবা চাইছিলেন ছেলে বাংলাদেশের হয়ে অংশ নিক আন্তর্জাতিক আসরগুলোতে। সেই লক্ষ্যেই বছরতিনেক আগে ঢাকায় এসে সব রেকর্ড ভেঙে পরপর তিনবার বাংলাদেশের দ্রুততম মানবের খেতাব জিতেছেন।